Saturday 1 October 2016

ফেসবুক স্টেটাস - ১


 যদি সুখী হতে চান আপনার চারপাশের মানুষ জনের উপর সুধারণা রাখুন। হতে পারে তাদের অনেকে আপনার ব্যাপারে সুধারণা রাখেনা, আপনার সমালোচনা করে। তারপরেও আপনি পজিটিভ হোন। তাদের ব্যাপারে নেগেটিভ ভাবতে ভাবতে আপনি এক সময় সব মানুষকে খারাপ ভাবতে শুরু করবেন। ফলে আপনার মন থেকে শান্তি উড়ে যাবে। আপনি সবসময় উত্তেজিত থাকবেন প্রতিশোধের আগুনে। ফলে নিজে জ্বলবেন আর শুধু নিজেই জ্বলবেন। এর থেকে অনেক ভালো লোকেদের ব্যাপারে সুধারণা রাখা। তাদের খারাপ কাজ গুলোকে ভুলে ভালো কাজ গুলোকে মনে রাখা। শান্তিকামীদের জন্য এটাই শ্রেষ্ঠ পথ!

✒ ভাই, আনন্দে থাকতে চাইলে নিউজ চ্যানেল দেখা বন্ধ করুন। এতে আপনার মন মস্তিষ্ক, শরীর সব ভালো থাকবে। আর খবর জানার জন্য নিউজপেপার পড়ুন। এতেও আপনার জন্য ক্ষতিকর জিনিস থাকলেও নিউজ চ্যানেলের থেকে কম। আর একান্তই যদি নিউজ চ্যানেল দেখতেই হয় তবে NDTV INDIA দেখুন। বিশেষ করে রাভিশ কুমারের রিপোর্ট এবং টক শো গুলো। নিসন্দেহে ভারতের একমাত্র (তুলনামুলক) নিরপেক্ষ নিউজ চ্যানেল। আর রাভিশ কুমার তো সেরার সেরা!

✒ যে মুসলিম ভাইয়েরা মহরম, জালসা বা অন্য কারনে রাস্তা আটকে, রাস্তার এবং পথচারীদের হক নষ্ট করে চাঁদা আদায় করে, দোকানে দলবল নিয়ে জোরপুর্বক চাঁদা আদায় করে, ক্লাবের তরফ থেকে বিভিন্ন মানুষের উপর চাপ দিয়ে তোলা আদায় করে তারা সাবধান! বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সা.) আমাদের কঠোরভাবে সাবধান করেছেন। তিনি বলেছেন, ''নিশ্চয়ই চাঁদাবাজরা জাহান্নামে যাবে''। [আহমাদ, তাবারানী, সিলসিলাহ সহীহাহ/৩৪০৫]

✒ বর্তমান সমাজে বিশেষ করে গ্রাম গুলোতে মেয়েদের উপর যত অত্যাচার, অবিচার, নির্যাতন হয়; সেই হিসেবে আরো অনেক অনেক নারী সংগঠনের দরকার। একেকটা ঘটনা শুনে চোখের জল আটকে রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। দুঃখ আর ভয়ংকর ব্যাপার হল ঘটনা গুলো মাঝে মাঝেই শুনি।

✒ বিপদ, দুঃখ, রোগ ব্যাধী গুলো দুনিয়াবী নজরে খুব খারাপ এবং অশান্তির। কিন্তু একজন প্রকৃত মুসলিমের জন্য তা আল্লাহর বিশাল রহমত। প্রত্যেক কষ্ট আসলে পাপমোচনকারী। আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার একটা মাধ্যম। দুনিয়ার প্রত্যেক কষ্টের বিনিময় মহান আল্লাহ বিশ্বাসীদের এত এত দেবেন যে অনান্য লোকেরা আফসোস করে বলবে দুনিয়াতে আমাদের শরীর যদি কাঁচি দিয়ে কাঁটা হতো তবে কতই না ভালো হতো!

✒ জীবনে কষ্ট পাওয়াও জরুরি। সফলতার জন্য। আসে পাশের সফল ব্যক্তিত্বদের দেখলে আমরা এটাই শিক্ষা পায়। যারা সুখে থেকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করেছে তাদের থেকে কষ্ট আর অপ্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করা লোকেরা বেশি সফল।

✒ যারা পাকিস্থানের সাথে যুদ্ধ করা নিয়ে লাফাচ্ছেন তারা কি নিজেরা যাবেন যুদ্ধের ময়দানে? সারা বিশ্বের শান্তিকামী লোকেরা 'যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই' শ্লোগান দিচ্ছেন আর আমাদের দেশের কিছু সস্তা দেশভক্ত যুদ্ধের জন্য শ্লোগান তুলছেন। তারা কি খেয়াল করেনা, যুদ্ধ মানে কত প্রানের মৃত্যু, কত মায়ের সন্তানশোক, কত স্ত্রীর স্বামী হারানো, কত বাচ্চার অনাথ হওয়া। তারা কি ভেবে দেখেনা, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য যুদ্ধ কতটা ভয়ংকর, কত হাজার কোটি টাকার লস, জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি। এত দেশভক্তি ফেসবুক টুইটারে কেন? আর্মিতে যোগ দিতে কে বাঁধা দিচ্ছে আপনাদের?!

✒ ইন্ডিয়া আমার দেশ। ইন্ডিয়া আমার জন্মভূমি। একজন ভারতীয় হিসেবে তো বটেই, একজন মুসলিম হিসেবেও আমি এই দেশকে ভালোবাসি। কারন, একজন মুসলিম হিসেবে আমি তাকদ্বীরে বিশ্বাসী। আর আমার তাকদ্বীরে এটাই ছিল যে আমি ভারতে জন্মগ্রহণ করি। অর্থাৎ আল্লাহ আমার জন্য চেয়েছেন আমি একজন ভারতীয় হই। আল্লাহ চাননি আমি বাংলাদেশী, নেপালী বা ব্রিটিশ হই। নিজের জন্মভুমির প্রতি ভালোবাসা আর অন্ধ জাতীয়তাবাদ এক নয়। আমি যেহেতু আমার দেশকে ভালোবাসি তাই ইন্ডিয়াকে 'রেন্ডিয়া' বলাদের প্রতি ঘৃণা আসবেই। ফেসবুকে সেই ঘৃণার প্রকাশ ঘটবে আন ফ্রেন্ড করার মাধ্যমে। নিজের দেশের প্রতি অন্য দেশের নাগরিকদের কাছে যে সম্মানটুকু চান সেটা আগে নিজেও দেওয়ার চেষ্টা করুন। বাংলাদেশকে বেশ্যারদেশ বলায় যেমন দেশভক্তি প্রকাশ পায় না, তেমনি ইন্ডিয়াকে রেন্ডিয়া বলাতেও পায় না।

✒ পাক-বাংলাদেশকে ভারত থেকে আলাদা করা যদি কোন ভুল না হয়ে থাকে তবে কাশ্মীরকে আলাদা করাও কোন ভুল হবেনা। আমরা যে কোন মুল্যে কাশ্মীরে শান্তি চাই। কাশ্মীরে ভারতে রেখে অথবা আজাদ করে। যদি ভারতে রেখে শান্তি সম্ভব না হয় তবে আজাদ করেই হোক। সেনা আর বুলেটের ভয়ে কি এক কোটি মানুষকে গুলাম বানিয়ে রাখা সম্ভব?! আমরা একটা কাশ্মিরিরও মৃত্যু চাই না। আমরা একটাও সেনাদের মৃত্যু চাই না। আমরা একটা বাচ্চাকেও অনাথ দেখতে চাই না। এবার আলাদা করে একটু ভাবা হোক। নতুন জানালা খোলা হোক। বাস্তব সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হোক। অনেকেই হয়ত সস্তা দেশভক্তি দেখিয়ে বলবেন কাশ্মীর নাহি ছোড়েঙ্গে ইত্যাদি। কিন্তু আপনারা কি এভাবেই বছরের পর বছর খুন খারাপি, অশান্তি আর কোটি কোটি টাকার অপচয় দেখতে চান? আর কত বছর লাগবে? কত সেনাকে শহীদ হতে লাগবে? কত কাশ্মীরিকে হত্যা করতে হবে? তারপর আসবে শান্তি! নাকি কাশ্মীরে শান্তি আসবেইই না কখনও। মানবতা কি ঠুকরে ঠুকরে কাদবে কাশ্মীরে!



No comments:

Post a Comment