Wednesday 14 September 2016

হাসতে হাসতে জীনা শিখো !

শেখ ফরিদ আলম

আশ্চর্য হয় যখন দেখি অনান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোট ছোট কথা নিয়ে এত আলোচনা, বিশ্লেষন করে যায় আর আমরা মুসলমানেরা কুর’আন হাদিসকে তুচ্ছ মনে করে ওদের আলোচনা গুলো পড়তে থাকি বা ওদের আলোচনায় শামীল হয়। গান্ধীজী বা রবীন্দ্রনাথের একটা সামান্য কথা বা বাণী নিয়ে কতই না আলোচনা হয়। অথচ রাসুলুল্লাহর সা. এমন সব বাণী আছে যা যেকোন মানুষকে পারফেক্ট করে তুলতে পারে। যা সমাজ বা দেশের জন্য হীতকর। ছোট একটা হাদীসে এমন নির্দেশ আছে যা মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ককে আরো মজবুত করতে পারে। আমি ১০০% বিশ্বাস করি ইসলামকে পুরোপুরি মেনে চললে সমাজে শান্তি আসবে। চারিদিকের এত ঝামেলা, খুন, ধর্ষন, অত্যাচারের মাত্রা অনেক কমে যাবে। আজ রাসুলুল্লাহর সা. একটা হাদিস নিয়ে লিখব। যা আমরা তেমন গুরুত্ব দিয়না। অথচ আমাদের জন্য তা খুবই গুরুত্বপুর্ন। রাসুল সা. বলেছেন,

‘প্রত্যেক কল্যাণমুলক কর্মই হল সাদকাহ। আর তোমার ভায়ের সহিত তোমার হাসিমুখে সাক্ষাত করাও…..কল্যাণমুলক কর্মের অন্তরভুক্ত’ (আহমেদ, তিরমীযি, হাকেম, সহিহুল জা’মে ৪৫৫৭ নং হাদীস)।

সদকাহ হল নেকির কাজ। লোকেদের দেখে হাসাটাও সদকাহ। সুহবান’আল্লাহ। রাসুল সা. আরো বলেছে- ‘কল্যাণমুলক কোন কর্মকেই অবজ্ঞা করো না, যদিও তা তোমার ভায়ের সহিত হাসি মুখে সাক্ষাত করেও হয়’ (মুসলিম/২৬২৬)।

হাসি কান্না নিয়েই জীবন। জীবন খুবই ছোট। এই ছোট জীবনেই আসে দুঃখ, যন্ত্রনা, ব্যথা, বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি। এত সবের মধ্যেও মানুষকে হাসা উচিত। কারণ এই সকল ব্যাপারে হাসি ঔষধের কাজ করে। কাঁদতে কাঁদতে হাসতে শেখাটা জীবনের একটা বড় শিক্ষা। এরই মধ্যে আছে সুখের রহস্য।

চারিদিকে তাকিয়ে দেখুন, মানুষ কিন্তু হাসমুখ লোকদেরই বেশি পছন্দ করে।যাদের ঠোটের কোনে মুচকি হাসি লেগে থাকে। সে নেতা হোক বা ডাক্তার অথবা কোন দোকানদার। আমরাও সেই সব দোকানেই যেতে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করি যেখানে হাসমুখ, মধুর মেজাজের দোকানি আছে। একটা চিনা প্রবাদ আছে ‘যারা হাসেনা তাদের কখনো দোকান করা উচিত নয়’। একজন সফল বিক্রেতা হতে হলে প্রথমেই আপনাকে ঠান্ডা মেজাজ আর হাসমুখ হতে হবে।

ডেল কার্নেগী বলেছেন, ‘সবসময় হাসতে হবে। হাসির মাধ্যমে আমরা জীবনের অনেক সমস্যাকেই দূর আকাশে পাঠাতে পারি’।  সমস্যা যতই হোক, দুঃখ যতই হোক সেই সময় মেজাজ ঠান্ডা রাখা জরুরি।

আপনার মুখের হাসি আপনাকে সুন্দর করে, আপনার ব্যক্তিত্বকে আকর্ষনীয় করে। মানুষকে তখনই সব থেকে সুন্দর লাগে যখন সে হাসে। গোমড়ামুখোদের কেউ পছন্দ করেনা। তাদের বন্ধু বান্ধব খুবই কম হয়। মুখে হাসি নিয়ে সহজেই অপরিচিত জায়গায়  আড্ডা জমিয়ে দেওয়া যায়।

সেই স্ত্রী সহজেই স্বামীর প্রিয়তমা হতে পারে যার মুখে হাসি লেগে থাকে। সোনা গয়না বা দামি পোষাকের থেকে স্বামীর কাছে তার ঠোটের হাসিই বেশি সুন্দর লাগে। তেমনি সেই স্বামী সহজেই স্ত্রীর মন জয় করতে পারে যার মুখে হাসি লেগে থাকে।

তাই আসুন আমরা কোন রকম পরিশ্রম না করে নেকি কামায়। লোকেদের দেখে, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের দেখে তাদের হাসি উপহার দেয়। যাদের সাথে মনোমালিন্য হয়েছে তাদের দেখেও হাসি। দেখবেন সেও আপনাকে তাই ফিরিয়ে দেবে।

No comments:

Post a Comment